ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে আমাদের এই পোষ্টটি সম্পূর্ন পড়ুন। ফেসবুক শুধুমাত্র বন্ধু এবং পরিবারের সাথে সংযোগ করার একটি প্ল্যাটফর্ম নয়; এটি অর্থ উপার্জনের জন্য একটি লাভজনক উপায়ও হতে পারে।
কি শুনে অবাক হচ্ছেন? ফেসবুক থেকে আবার কিভাবে আয় করা যায়? এই সময়ে অনেক কার্যকরী উপায় রয়েছে ফেসবুক থেকে আয় করার। নিজের দক্ষতার সাথে মিল রেখে কাজ নির্বাচন করে ফেসবুকে টাকা ইনকাম করতে পারবে যে কোন মানুষ।
ফেসবুক থেকে টাকা আয়ের জন্য এর ব্যবহারকারীরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, মেসেঞ্জারে বিজ্ঞাপন ও মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রির মতো বিষয়গুলো অনুসরণ করে থাকেন। সেখান থেকে অতিরিক্ত টাকা আয় করতে চাইলে আরো অনেক উপায় রয়েছে । নিচে কিছু উপায় বা সুযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণ উল্লেখ করা হলো।
পড়ুনঃ
ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার নিয়ম
১। ইন-স্ট্রিম অ্যাড
ভিডিওর মধ্যে থাকা হঠাৎ বিজ্ঞাপনগুলো দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ইন-স্ট্রিম বিজ্ঞাপন ফিডের একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞাপনের চেয়ে বেশি কার্যকরী। ব্যবহারকারীরা ফিডের স্বতন্ত্র বিজ্ঞাপন এড়িয়ে যেতে চান বা যেতে পারেন। কিন্তু ইন-স্ট্রিম বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে ভিডিওটি অবশ্যই গল্প আকারে উপস্থাপন করতে হয়। ফেসবুকের কিছু শর্তগুলো পূরণের পাশাপাশি ভিডিওগুলোও এক মিনিটের বেশি দৈর্ঘ্যের হতে হয়।
২। পেইড সাবস্ক্রিপশন
টাকার মাধ্যমে সাবস্ক্রিপশন তৈরি করেও মাসিক ইনকাম বাড়ানো সম্ভব। এই পদ্ধতিতে ফলোয়াররা টাকার মাধ্যমে পেজে সাবস্ক্রিপশন নিয়ে বিশেষ কনটেন্ট, ছাড়সহ নানা সুবিধা ভোগ করতে পারেন। এই সুবিধাটি শুধুমাত্র ফেসবুকের ইনভাইটেশন ফিচারের মাধ্যমেই পাওয়া যায়। ব্যবহারকারীরা ফ্যান সাবস্ক্রিপশন আনলক করতে পারে যখন তাদের ১০ হাজার ফলোয়ার বা ২৫০ জনের বেশি রিটার্ন ভিউয়ার থাকে কিংবা ৫০ হাজার পোস্ট এনগেজমেন্ট বা ১ লাখ ৮০ হাজার ওয়াচ মিনিট হয়ে থাকে।
৩। ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ
পেজের রিচ বাড়াতে এবং কনটেন্টকে আকর্শনীয় করতে অভিজ্ঞ কারও সাথে কাজ করতে পারেন বা শেয়ার করতে পারেন। আপনার পেজে নতুন নতুন দর্শক টানতে এবং ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়াতে অনেক নির্মাতা, কোম্পানি, ব্র্যান্ডও আছে। বেশ ভালো ফলোয়ার রয়েছে এমন কারও সঙ্গে তারা কাজ করতে চান। তবে টাকার বিনিময়ে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। এজন্য অবশ্যই আপনার পোস্টে ব্যবসায়িক অংশীদারদের ট্যাগ শুরুর আগে প্রথমে তাদের কাছে অ্যাক্সেসের জন্য অনুরোধ করতে পারেন।
৪। ফলোয়ারদের কাছ থেকে আয়
সম্প্রতি ফেসবুকের নির্দেশনা বা ঘোষনা অনুযায়ী ফেসবুকে কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং ইনফ্লুয়েন্সাররা রিলে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ভিউ তৈরির মতো একটি সিরিজ সম্পূর্ণ করে মাসে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত অর্থ পুরস্কার পেতে পারবেন।
৫। পেইড ইভেন্ট
আপনি চাইলেই ফেসবুক এ টাকার বিনিময়ে ইভেন্ট পরিচালনাও করতে পারবেন। ইভেন্ট ফিচারটির সাহায্যে পেজ দিয়ে ইভেন্টের সময়সূচি তৈরি করা, সাজানো এবং তা চালাতেও পারবেন। এইজন্য ফেসবুক পেজে পেইড অনলাইন ইভেন্টসের ফিচারটি প্রথমে চালু করতে হবে। নতুন ইভেন্ট তৈরির জন্য ইভেন্ট ট্যাবে ক্লিক করতে হবে। তারপর পেইড অপশনটি নির্বাচন করে ইভেন্ট, মূল্য এবং যদি কোনো সহ-হোস্ট থাকে তার সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে দিতে হবে।
৬। ফলোয়ারদের অনলাইন স্টোরে নিয়ে যাওয়া
সোশ্যাল কমার্স ফিচারটির সাহায্যে ফেসবুক পেজ থেকে ক্রেতাদের অনলাইন স্টোরে নিয়ে যাওয়া যাবে। যেসকল ব্র্যান্ডের এরইমধ্যে ফেসবুকে একটি ছোট ব্যবসা আছে তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার পদ্ধতি। যারা ফেসবুকে স্ক্রল করে বেড়ায় তাদের বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে পণ্যটি কেনার জন্য আগ্রহী করা যেতে পারে।
৭। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যেখানে আপনি চাইলে নামিদামি অনলাইন ও সার্ভিস গুলি প্রচার করে দিতে পারেন। তারা আপনাকে একটি লিংক দিয়ে দিবেন যা শুধু মাত্র আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর জন্য তৈরি অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করতে হবে। যদি শ্রোতারা আপনার দেওয়া লিঙ্কের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করে তবে আপনি একটি কমিশন পাবেন৷ এই ভাবেই আপনি ফেইসবুক থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
৮। Facebook Marketplace
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসও একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম লোকাল পণ্য বিক্রি করার জন্য । খুব সহজে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে আপনার লোকাল এর বিখ্যাত পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন। এটি গ্রামের অপরিচিত পণ্যকে বিজনেস এ পরিণত করার এটি একটি সহজ উপায়ও বটে।
৯। Content Creation
আকর্ষণীয় বিষয়বস্তুর উপর কোন ভিডিও বা কনটেন্ট তৈরি করাই অনুসরণকারীদের আকৃষ্ট করার মূল চাবিকাঠি। আপনি যদি মন হরণ করে এমন ভিডিও, লেখালেখি বা ছবি তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফেসবুক থেকে উপার্জন করতে পারবেন।
১০। Online Coaching
অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন অনলাইন কোচিং বা শিক্ষকতা করে ।ফেইসবুক এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এ অনলাইন কোচিং বা পরামর্শের মাধ্যমে আপনার জ্ঞান এবং দক্ষতা শেয়ার করতে পারেন। এতে করে আপনার অনুসারীদের মাঝে আপনার পরিষেবাগুলি অফার করতে পারেন ৷
উপসংহার
একটি ব্যবসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পণ্যের ব্র্যান্ডিং করা কৌশল। ব্যবসার বা পণ্যের ব্র্যান্ডিং কৌশল ব্যবসাকে সঠিক দিকে পরিচালিত করে এবং সরাসরি ক্রেতার চাহিদা জানতে সহায়তা করে। ব্যবসার ব্র্যান্ডিং করার কৌশল বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই আপনার জানা দরকার মার্কেটিং করার সকল বিষয়।
সোস্যাল মিডিয়ার একটি জনপ্রিয় মার্কেটিং কৌশল হল ফেসবুক মার্কেটিং। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম। যেখানে কোটি কোটি মানুষ তাদের ব্যবসা সাইটের প্রচারনা করে আসছে।