সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কাকে বলে: আজকের ডিজিটাল যুগে, সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে, প্রতিদিন একবার হলেও আমরা প্রত্যেকে কোন না কোন সোশ্যাল প্লাটফর্মের সাথে সংযুক্ত হয়। এই সোশ্যাল প্লাটফর্ম আমাদের ভৌগলিক ব্যবধান দূর করেছে।
যাইহোক, সোশ্যাল মিডিয়া শুধুমাত্র বন্ধু এবং পরিবারের সাথে সংযোগ করার একটি প্ল্যাটফর্ম নয়; এটি ব্যবসার জন্যও একটি বিশাল প্লাটফর্ম। কারন এখানে বিভিন্ন ব্যক্তি বা ব্যাবসায়িরা তাদের পণ্য বা পরিষেবাগুলির মার্কেটিং করে থাকেন। চলুন আমরা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেয়।
Read: ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার সহজ ও কার্যকরী ১০টি টিপস!
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে জানার পূর্বে আমরা জানি মার্কেটিং আসলে কি? সাধারনত কোন পন্য, সেবা, অথবা ব্যবসার প্রচারের উদ্দেশ্যে যে প্রচার-প্রচারনা করা হয় এটাই মার্কেটিং। তাহলে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলতে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যে মার্কেটিং করা হয় তাকে বোঝায়। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের মধ্যে জনপ্রিয়, Facebook, LinkedIn, YouTube, Instagram.
অনলাইনে এখন সবথেকে বেশি মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহার করে থাকে এজন্য ব্যবসায়ীরাও সেই কৌশলে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের পন্য বা সেবার প্রচার করে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মার্কেটিং করাতে তাদের যেমন লোকবল ও পরিশ্রম কমে গেছে ঠিক অপরদিকে তাদের বিক্রি অনেকগুনে বেড়ে গেছে। তাহলে বুঝতেই পারছেন এর চাহিদা কেমন।
দিন-দিন এই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর চাহিদা সারাবিশ্বব্যাপী বেড়েই চলেছে। এক গবেষনায় দেখা গেছে বিশ্বের সবথেকে বিজনেস গ্রথ এই অনলাইন মার্কেটিং এবং এসইও সেক্টরে হচ্ছে। যা প্রতি বছর ৩৩% করে বাড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
দেখুন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে অবশ্যই আপনাকে ট্রেন্ডিং অনুসরন করে চলতে হবে। আমরা হয়তবা নোকিয়ার কথা সকলেই জানি। যারা বিশ্বের নাম্বার #১ মোবাইল ফোন নির্মাতা কোম্পানি হওয়া সত্বেও প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পাড়ায় বিফল হয়েছে। এবং সর্বশেষ মাইক্রোসফট এর কাছে কোম্পানি বিক্রি করে দিতে হয়েছে।
সুতরাং বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং খুব গুরুত্বপূর্ন, কারন বর্তমানে কয়জন মানুষ টিভি বা রেডিও শুনে? আমি নিজেও মনে পরে না যে শেষ কবে বিটিভি অথবা কোন চ্যানেলের লাইভ শো একসাথে বসে দেখেছি। আপনি কি বলেন?
কিন্তু আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় আজকে ফেসবুক বা ই্উটিউব কতবার ওপেন করেছেন। হয়তবা সংখ্যাটা অনেক। যাইহোক, এজন্যই মানুষের ভিড় যেখানে বেশি বিজনেস প্রচার সেখানেই করলে লাভজনক হওয়ার আশা অনেক বেশি। এছাড়াও আরো কিছু গুরুত্বপূর্ন বিষয় আছে যা নিচে দেওয়া হল –
ব্র্যান্ড সচেতনতা এবং খ্যাতি তৈরি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, এটি ব্যবসাগুলিকে ব্র্যান্ড সচেতনতা এবং খ্যাতি তৈরিতে সহযোগীতা করে। কারন প্রতিনিয়ত সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে ব্যবসায়িক নতুন নতুন পন্য বা সেবার প্রচার করলে গ্রাহকের সাথে ব্যবসায়ের একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যার ফলে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।
টার্গেট গ্রাহকের কাছে পৌছানো
দ্বিতীয়ত, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ব্যবসাগুলিকে তাদের সঠিক গ্রাহকের কাছে পৌছে দিতে সমর্থন করে। যার ফলে লক্ষ্য দর্শকদের সাথে ব্যবসায়িরা সরাসরি জড়িত হতে পারে এবং পন্যের প্রচার করতে পারে।
Facebook, Twitter, এবং Instagram এর মত প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কোম্পানিগুলো তাদের গ্রাহকদের সাথে রিয়েল-টাইমে যোগাযোগ করতে পারে, তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে এবং তাদের উদ্বেগের সমাধান করতে পারে। সরাসরি সম্পৃক্ততার এই স্তরটি গ্রাহকদের সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করে, গ্রাহকের সন্তুষ্টি বাড়ায় এবং গ্রাহকের আনুগত্যকে উন্নত করে। যা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ছাড়া সম্ভব নয়।
উপসংহারঃ
পরিশেষে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ব্যবসার জন্য বাজার গবেষণা পরিচালনা এবং ভোক্তাদের মতামত সংগ্রহ করার জন্য একটি চমৎকার সুযোগ প্রদান করে। যার ফলে কোম্পানিগুলি গ্রাহকের পছন্দ, আগ্রহ এবং আচরণ সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য জানতে পারে। এই ডেটাটি গ্রাহকের চাহিদাগুলিকে আরও ভালভাবে মেটাতে বিপণন কৌশল এবং পণ্য অফারগুলিকে উপযোগী করতে ব্যবহার করা যেতে পারে, যার ফলে আরও কার্যকর প্রচারাভিযান এবং উন্নত ব্যবসায়িক ফলাফল পাওয়া যায়।
সুতরাং শেষ করার আগে আরেকটি কথা দিয়ে শেষ করবো। যদি আপনি আপনার ব্যবসার সাফল্য বা উন্নতি চান তাহলে অবশ্যই বর্তমানের ট্রেন্ডিং অনুসরন করে বিজনেস করুন। তাহলে সফলতা খুব দ্রতই স্পর্শ করতে পারবেন।