ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার সহজ ও কার্যকরী টিপস নিয়ে সাজানো হয়েছে আমাদের আজকের এই পর্বটি। বর্তমানে ফেসবুক সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মটি ব্যবহার করে আমরা দেশ বিদেশের জানা অজানা বিভিন্ন মানুষের সাথে ছবি, ভিডিও, স্ট্যাটাস শেয়ার করি এবং কথা বা ভিডিওর মাধ্যমে মনের ভাব শেয়ার করি। কিন্তু আপনি কি জানেন এই ফেসবুক বর্তমানে টাকা আয় করার জন্য একটি দারুন প্লাটফর্ম।
এছাড়াও বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া গুলো অনলাইন মার্কেটিং এর একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে, ব্যাক্তিগত কিংবা ব্যবসায়িক বিভিন্ন পণ্য, ব্রান্ড ও সার্ভিস গুলো প্রোমোশন করার জন্য প্রচুর টাকা খরচ করা হয়ে থাকে। আজকে আমরা ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার সহজ ও কার্যকর টিপস সম্পর্কে জানবো। চলুন শুরু করা যাক!
পড়ুনঃ একটি ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসা শুরু করার ৮টি মূলমন্ত্র!
ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার সহজ ও কার্যকরী ১০টি টিপস
শুনে অবাক হচ্ছেন? ফেসবুক থেকে টাকা আয় করা যায় কিভাবে?
এই সময়ে অনেক কার্যকরী উপায় রয়েছে ফেসবুক থেকে আয় করার জন্য। নিজের দক্ষতার সাথে মিল রেখে কাজ নির্বাচন করে ফেসবুকে টাকা ইনকাম করতে পারবে যে কোন মানুষ।
ফেসবুক থেকে টাকা আয়ের জন্য এর ব্যবহারকারীরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, মেসেঞ্জারে বিজ্ঞাপন ও মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রির মতো বিষয়গুলো অনুসরণ করে থাকেন। সেখান থেকে অতিরিক্ত টাকা আয় করতে চাইলে আরো অনেক উপায় রয়েছে । নিচে কিছু উপায় বা সুযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণ উল্লেখ করা হলো-
১। ইন-স্ট্রিম অ্যাড
যখন আমরা কোন লাইভ ইভেন্ট বা প্রগ্রাম ফেসবুকে চালায় তখন প্রগাম চলাকালীন ভিডিওর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা হয় এগুলোকে ইন-স্ট্রিম অ্যাড বলা হয়। ইন-স্ট্রিম অ্যাড অন্যান্য সাধারন সময়ের অ্যাডের তুলনায় অনেক বেশি লাভজনক। কারন দর্শকরা প্রগ্রাম চলাকালীন অ্যাডটিকে এড়িয়ে যেতে পারে না। এজন্য সম্পূর্ন অ্যাডটি দেখতে হয়, তাই অ্যাডের সম্পূর্ন সুবিধা প্রেজেন্টারেরা পেয়ে থাকেন।
২। পেইড সাবস্ক্রিপশন
পেইড সাবস্ক্রিপশন ফেসবুকের একটি প্রিমিয়াম ফিচারস্ যার মাধ্যমে গ্রাহকেরা মাসিক টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন কনটেন্ট, ডিসকাউন্ট ও নানা সুবিধা নিয়ে থাকেন। তবে, এই ফিচারসটি সব দেশের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। ফেসবুক থেকে টাকা আয় করতে সাবস্ক্রিপশনের এই সুবিধাটি শুধুমাত্র ফেসবুকের ইনভাইটেশন ফিচারের মাধ্যমেই পাওয়া যায়। ব্যবহারকারীরা ফ্যান সাবস্ক্রিপশন আনলক করতে পারে যখন তাদের ১০ হাজার ফলোয়ার বা ২৫০ জনের বেশি রিটার্ন ভিউয়ার থাকে কিংবা ৫০ হাজার পোস্ট এনগেজমেন্ট বা ১ লাখ ৮০ হাজার ওয়াচ মিনিট হয়ে থাকে।
৩। ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ
পেজের রিচ বাড়াতে এবং কনটেন্টকে আকর্শনীয় করতে অভিজ্ঞ কারও সাথে কাজ করে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করতে পারেন। আপনার পেজে নতুন নতুন দর্শক টানতে এবং ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়াতে অনেক নির্মাতা, কোম্পানি, ব্র্যান্ডও আছে। বেশ ভালো ফলোয়ার রয়েছে এমন কারও সঙ্গে তারা কাজ করতে চান। তবে টাকার বিনিময়ে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। এজন্য অবশ্যই আপনার পোস্টে ব্যবসায়িক অংশীদারদের ট্যাগ শুরুর আগে প্রথমে তাদের কাছে অ্যাক্সেসের জন্য অনুরোধ করতে পারেন।
৪। ফলোয়ারদের কাছ থেকে আয়
সম্প্রতি ফেসবুকের নির্দেশনা বা ঘোষনা অনুযায়ী ফেসবুকে কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং ইনফ্লুয়েন্সাররা রিলে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ভিউ তৈরির মাধ্যমে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। এবং এমন একটি সিরিজ সম্পূর্ণ করে মাসে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত অর্থ পুরস্কার পেতে পারবেন।
৫। পেইড ইভেন্ট
আপনি চাইলেই ফেসবুক এ টাকার বিনিময়ে ইভেন্ট পরিচালনাও করতে পারবেন। ইভেন্ট ফিচারটির সাহায্যে পেজ দিয়ে ইভেন্টের সময়সূচি তৈরি করা, সাজানো এবং তা চালাতেও পারবেন। এইজন্য ফেসবুক পেজে পেইড অনলাইন ইভেন্টসের ফিচারটি প্রথমে চালু করতে হবে। নতুন ইভেন্ট তৈরির জন্য ইভেন্ট ট্যাবে ক্লিক করতে হবে। তারপর পেইড অপশনটি নির্বাচন করে ইভেন্ট, মূল্য এবং যদি কোনো সহ-হোস্ট থাকে তার সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে দিতে হবে।
৬। ফলোয়ারদের অনলাইন স্টোরে নিয়ে যাওয়া
সোশ্যাল কমার্স ফিচারটির সাহায্যে ফেসবুক পেজ থেকে ক্রেতাদের অনলাইন স্টোরে নিয়ে যাওয়া যাবে। যেসকল ব্র্যান্ডের এরইমধ্যে ফেসবুকে একটি ছোট ব্যবসা আছে তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার পদ্ধতি। যারা ফেসবুকে স্ক্রল করে বেড়ায় তাদের বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে পণ্যটি কেনার জন্য আগ্রহী করা যেতে পারে।
৭। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যেখানে আপনি চাইলে নামিদামি অনলাইন ও সার্ভিস গুলি প্রচার করে দিতে পারেন। তারা আপনাকে একটি লিংক দিয়ে দিবেন যা শুধু মাত্র আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর জন্য তৈরি অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করতে হবে। যদি শ্রোতারা আপনার দেওয়া লিঙ্কের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করে তবে আপনি একটি কমিশন পাবেন৷ এই ভাবেই আপনি ফেইসবুক থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
৮। ফেসবুক মার্কেটপ্লেস
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসও একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম লোকাল পণ্য বিক্রি করার জন্য । খুব সহজে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে আপনার লোকাল এর বিখ্যাত পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন। এটি গ্রামের অপরিচিত পণ্যকে বিজনেস এ পরিণত করার এটি একটি সহজ উপায়ও বটে।
৯। কন্টেন্ট তৈরি করা
আকর্ষণীয় বিষয়বস্তুর উপর কোন ভিডিও বা কনটেন্ট তৈরি করাই অনুসরণকারীদের আকৃষ্ট করার মূল চাবিকাঠি। আপনি যদি মন হরণ করে এমন ভিডিও, লেখালেখি বা ছবি তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফেসবুক থেকে উপার্জন করতে পারবেন।
১০। অনলাইন কোচিং
অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন অনলাইন কোচিং বা শিক্ষকতা করে ।ফেইসবুক এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এ অনলাইন কোচিং বা পরামর্শের মাধ্যমে আপনার জ্ঞান এবং দক্ষতা শেয়ার করতে পারেন। এতে করে আপনার অনুসারীদের মাঝে আপনার পরিষেবাগুলি অফার করতে পারেন ৷
উপসংহার
পরিশেষে বলতে পারি, ফেসবুক বর্তমান সময়ে অনলাইনে ইনকামের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি মাধ্যম। কারন এটি ব্যবহার করে অনেক ছোট ছোট বিজনেস উপরে উঠে যাচ্ছে। তাই, এই সময়টি সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য আপনার আজই কাজে নেমে যেতে হবে। এবং ব্যবসার ব্র্যান্ডিং করার কৌশল বাস্তবায়ন করতে অবশ্যই আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখতে হবে।
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জনপ্রিয় মার্কেটিং কৌশল হল ফেসবুক মার্কেটিং। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম। যেখানে কোটি কোটি মানুষ তাদের ব্যবসার প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে থাকে।