ব্লগিং করে টাকা ইনকাম মাসে ২৫-৩০ হাজার

ব্লগিং করে টাকা ইনকাম Blogging

ব্লগিং করে টাকা ইনকাম বা লেখা লেখি করে ইনকাম। আমাদের এই ব্লগ আর্টিকেলে আপনাকে স্বাগতম! আপনার কাছে যদি ১৫ মিনিট সময় থেকে থাকে তাহলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়া শুরু করুন।

অনলাইনে ইনকাম! কথাটা শুনলেই কেমন একটা সুন্দর প্রশান্তি লাগে নিজের মধ্যে, তাইনা?

অনলাইনে আয়ের অনেক মাধ্যম রয়েছে তবে ব্লগিংটা কেন করবেন, ব্লগিং করে টাকা ইনকাম এর উৎস কি, কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন বা ব্লগিং করে মাসে কত টাকা আয় করা যায় এসকল আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবেন আমাদের আজকের এই পর্বে।

প্রথমেই আমি একটা গল্প দিয়ে শুরু করব, এই গল্পটা এমন একজনের সম্পর্কে যেকিনা এসইও(SEO) এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর বস বলা চলে। তবে তার শুরুটা হয়েছিল এই ব্লগিং থেকেই। তার নাম Neil Patel, লন্ডনে জন্ম হলেও তার পিতা ২ বছর বয়সেই তাদের নিয়ে আমেরিকায় পারি জমায়।

তার জীবন থেকে নেয়া, সে যখন ১৬ বছরের যুবক ও একজন ছাত্র। তখন ২০০১ সালে সে তার প্রথম ওয়েবসাইট তৈরি করে এবং তার ক্যারিয়ার শুরু করার কথা চিন্তা করে। এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর ট্রেনিং করে। তারপর সে তার নিজের শিক্ষা ও জ্ঞানটাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর সেবা ও ব্লগিং লেখা শুরু করলেন।

কারন সে টিন্তা করেছিলেন যে, তার জ্ঞানটা সবার মাঝে বিলিয়ে দিবেন। তারপর সে আস্তে আস্তে অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন এই ডিজিটাল মার্কেটিং ও ব্লগার হিসেবে। এখন তার ওয়েবসাইটের প্রতিদিনের ভিজিটর কয়েক লাখেরও বেশি। কিন্তু তার এই পথচলাটা অনেক বেশি সহজ ছিল না।

এছাড়াও নিল প্যাটেল এর মত আরো অনেক সফল ব্লগার আছেন যেমন – ড্যারেন রোজ, সৈয়দ বালখি, এবং জেফ বুলাস ইত্যাদি। তারা সকলেই জিরো থেকে শুরু করেছিল। কিন্তু তারা হাল ছাড়েনি তারা হয়তো জানতো যে এই কাজে সফলতা তার আসবেই। এজন্যই মনের জোরটা অনেক বেশি জরুরি নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য।

একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন, আপনি যখনই কোন একটা কিছু শুরু করতে যাবেন বা শুরু করার পরে সেটাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনেক বাধা আসবে।

তবে এর মধ্যে আপনাকে ধৈর্যহারা বা হতাশাগ্রস্থ হলে চলবে না। প্রথম দিকে ব্লগারদের সবথেকে বড় হতাশার কারন হচ্ছে তার লেখার অর্গানিক ভিজিটর খুব কম থাকে। এসকল খুটিনাটি আরো অনেক সমস্যার সমাধান আমরা নিচে আলোচনা করছি সামনে এগিয়ে যান।

আপনি যদি ডিসিশন নিয়েই থাকেন যে আপনি একজন ব্লগার হবেন তাহলে নিচের প্রশ্নগুলো আপনার জন্য।

আপনি কি এটাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে চান? আপনি কি একজন ছাত্র? আপনি কি চাকুরির পাশাপাশি এই ব্লগিং করতে চান? আপনি কি এটার জন্য প্রতিদিন ২ ঘন্টা সময় দিতে পারবেন? অথবা আপনি কি ব্লগিং করে অনেক বেশি আয় করতে চান?

উপরের এই সকল প্রশ্নের মধ্যে যদি যেকোন একটার উত্তর হ্যা হয় তাহলেই হবে। আপনি পারবেন। প্রথমেই একটা কথা ক্লিয়ার করে দেই। এই ব্লগিং করতে আপনার পূর্ব কোন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই।

আরো পড়ুনঃ

কেন ব্লগিং করবেন

ব্লগিং একটি স্বাধীন পেশা আপনি যখন চান যেসময় চান এটা শুরু করতে পারেন। এবং ইচ্ছামতো আপনার ব্লগে কাজ করতে পারেন। এখানে কাজের কোন চাপ থাকে না বা কোন ক্লায়েন্টের ঝামেলাও নাই। এছাড়াও এই ব্লগের মাধ্যমে একজন ব্লগার তার প্রতিভা সারা বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দিতে পারেন।

ব্লগিং করার প্রবনতা বা চাহিদা দিন দিন অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারন এটা একজন ছাত্র তার কলেজ জীবন থেকেই শুরু করতে পারে অথবা একজন চাকুরিজীবি তার কাজের পাশাপাশি লেখা-লেখি করে চালিয়ে যেতে পারে। তারপর এক সময় দেখা যাবে এই ব্লগিং তার আয়ের একটা বড় উৎস হয়ে উঠেছে।

ব্লগিং সাইট থেকে আয়ের পরিমান দিন-দিন অনেক বৃদ্ধি পায়। তবে একজন ব্লগার হিসেবে মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা তোলা খুবই সহজ। শুধুমাত্র আপনাদের কিছু নিয়ম-কানুন মেনে কাজ করতে হবে।

ব্লগিং কেন করবেন তার আরেকটি বড় কারন, এটা শুরু করতে কোন ইনভেস্টমেন্ট দরকার পরে না। কারন আপনি প্রথম দিকে চাইলে গুগল এর ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেস এ আপনার জন্য একটা ফ্রি ব্লগিং সাইট ওপেন করতে পারেন যা সম্পূর্ণ ফ্রি এবং প্রতিনিয়ত সেখানে লেখা পোস্ট করতে পারবেন।

ব্লগিং করে টাকা ইনকাম এর উৎস কি

ব্লগিং করে টাকা উপার্জন কিভাবে করা যায় বা এর আয়ের উৎস কি? এই প্রশ্নটা আসলে অনেকের কাছ থেকেই পাওয়া যায়। কারন আপনি আপনার মূল্যবান সময় এখানে ব্যয় করবেন। অবশ্যই কোন না কোন লাভের আশায়। আপনি চাইলে একটা ব্লগ থেকে বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে পারেন তার মধ্যে থেকে প্রধান কিছু আয়ের বর্ননা নিচে উল্ল্যেখ করা হল।

ব্লগিং করে টাকা ইনকাম এর কিছু উৎস দেওয়া হলঃ

১. গুগল এডসেন্স

২. নিজ অভিজ্ঞতার উপর মার্কেটিং

৩. ব্লগে সরাসরি বিজ্ঞাপন প্রকাশ

৪. নিজের পণ্য বিক্রি

৫. এফিলিয়েট মার্কেটিং

এখন আমরা আপনাদের এই বিষয়টি আরো সহজ করে বোঝানোর জন্য এই সকল উৎসের উপরে সংক্ষিপ্ত কিছু বর্ননা করবো।

১. গুগল এডসেন্স

গুগল এডসেন্স বর্তমান বিশ্বের সবথেকে বড় অনলাইন অ্যাডভার্টাইজমেন্ট প্লাটফর্ম। এই গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগ সাইটে মোনিটাইজেশন এর মাধ্যমে এ্যাড প্রদর্শন করে ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

একটা গবেষনায় পাওয়া যায় যে, ৮০% ব্লগার ইনকাম করেন এই গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে। গুগল এডসেন্স থেকে আয় করা অনেক সহজ। এর জন্য দরকার আপনার সাইটে মিনিমাম প্রতিদিন ১০০ জন অর্গানিক ভিজিটর। যত বেশি দর্শক বা ভিজিটর আপনার সাইটে প্রবেশ করবে গুগল এর বিজ্ঞাপন দেখে আয় ততটা বৃদ্ধি পাবে।

এই বিজ্ঞাপন দেখে আয় করাকে RPM (Revenue Per mile) বলে থাকে। তবে এ্যাড এর উপর ক্লিক পরলে এর ইনকামটা আরো বেশি হয়।

তবে বর্তমানে একটা সাইটে গুগল এর বিজ্ঞাপন পেতে অনেক নিয়ম মেনে কাজ করতে হয়। কোন কপি-পেস্ট করলে হবে না। কারন গুগল এখন থেকে তাদের মনিটাইজেশন এর উপর অনেক বেশি স্ট্রিক হয়েছে। তারা আপনার সাইটের প্রধান কিছু বিষয় চেক করে যেমন- আপনার সাইটে অর্গানিক ভিজিটর কেমন, সাইটের কন্টেন্টগুলো ইউনিক কিনা, সাইটের অর্গানিক কিওয়ার্ড আছে কিনা, এবং সাইটের বয়স নিম্নে ৩ মাস হয়েছে কিনা। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটার কিছু পরিবর্তন হতে পারে।

২. নিজ অভিজ্ঞতাকে ফ্রিল্যান্স করুন

ব্লগিং এর আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে আপনার নিজের যে অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান আছে সেসকল বিষয়ে আপনি প্রশিক্ষন প্রদানের জন্য আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। যার ফলে নিজের একটা ফ্রিল্যান্স আয়ের ব্যবস্থা হবে।

মনে করুন আপনি একজন ভাল ওয়েব ডেভেলপার বা একজন ভাল গ্রাফিক্স ডিজাইনার। এখন আপনার এই অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগিয়ে আপনি কিন্তু অনলাইনে ট্রেনিং বা টিপস শেয়ার করতে পারেন। এবং অবশ্যই সেগুলো আপনি পেইড আর্টিকেল এ অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

এখন বর্তমানে অনলাইনের ট্রেনিং এর পরিমান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনি চাইলে আপনার কোন একটা পোস্ট এর মাধ্যমে অনলাইনের কোর্সের কোন অফার প্রদান করতে পারেন। তবে অবশ্যই আপনার সাইটের ভিজিটর যদি ভাল থাকে তাহলে আপনি সেখান থেকে ভাল একটা ফলাফল পেতে পারেন।

এখনকার এই ডিজিটাল অগ্রগতিতে আপনি কেন পিছিয়ে থাকবেন। তাইতো আপনার যদি এমন কোন ট্রেনিং দেওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে আপনিও হতে পারেন একজন ভাল অনলাইন মেনটর।

৩. ব্লগে সরাসরি বিজ্ঞাপন প্রকাশ

একটা ব্লগ যখন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তখন সেই ব্লগে অনেকেই চাই টাকার বিনিময়ে তাদের প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন দিতে। তাইতো আপনি যদি চান যে না আমি আমার সাইটে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন না দিয়ে লোকাল কোম্পনীর বিজ্ঞাপন দিবেন এটা ভাল ডিসিশন। তবে সবসময় এটা ভাল নাও হতে পারে।

কারন আপনার এই বিজ্ঞাপন ম্যানেজ করার জন্য একটা লোক দরকার। এবং প্রতিনিয়ত ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করার প্রয়োজন পরবে যখন কোন বিজ্ঞাপন এর মেয়াদ শেষ হবে।

এই সকল ঝামেলা যদি আপনি কন্ট্রোল করতে পারেন তাহলে এমন সরাসরি বিজ্ঞাপন দেখিয়েও অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। সরাসরি বিজ্ঞাপন প্রকাশের ক্ষেত্রে আপনার নিজস্ব একটা কন্ট্রোল থাকে কিন্তু গুগল এডসেন্স এ কোন নিজস্ব কন্ট্রোল থাকে না। গুগলে আপনার শুধুমাত্র কোড বসাতে হবে আর বিজ্ঞাপন গুগল ই সিলেক্ট করে দিবে যে কি এ্যাড প্রদর্শিত হবে।

৪. নিজের পণ্য বিক্রি

নিজের ব্লগে নিজের পন্য শুনতে খুব সুন্দর লাগে না?

হ্যা, অবশ্যই আপনার নিজের যদি কোন পন্য থাকে। তাহলে আপনি চাইলেই আপনার নিজের ব্লগে তার বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারেন।

এই পয়েন্টে একটা গল্প মনে পরে গেল, একজন নতুন লেখক তার নিজের একটা বই লিখলেন প্রায় দীর্ঘ ২ বছর ধরে। এখন সে চিন্তা করলেন যে তার এই বইটা সে বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপন দিবেন। কিন্তু বিভিন্ন মহলে ঘুরে সে দেখলো যে সবাই অনেক বেশি টাকা চার্জ করছে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য।

তখন সে নিজে নিজেই একটা ব্লগ তৈরি করার কথা চিন্তা করলেন এবং সেখানেই সে তার বই এর বিজ্ঞাপন দিলেন। হ্যা, প্রথম দিকে তার অনেক বেগ পেতে হয়েছে কিন্তু পরবর্তিতে তার আর পেছনে ফিরে তাকানো লাগে নি। তার বইটাতো বিক্রি হলোই সাথে সাথে তার ব্লগটাও জনপ্রিয় হয়ে উঠলো। এটাই ডিজিটাল বিজনেস আইডিয়া যখন-তখন যেকোন কিছুই সম্ভব।

এই গল্প থেকে একটা বিষয় শিক্ষা নেওয়া যায় যে, কোন কিছু মন থেকে বিশ্বাস করলে তার ৫০% কাজ হয়ে যায় বাকি ৫০% কাজ করতে নামলেই হয়ে যাবে। এখানে সেই বই বিক্রেতা যদি তার বিজ্ঞাপন অন্য সাইটে দিতেন তাহলে না হলেও ২০-৩০ হাজার টাকা খরচ হত এবং সেই বিজ্ঞাপন এর একটা টাইম লিমিট থাকতো হয়ত ১মাস বা ২ মাস।

কিন্তু নিজের একটা ব্লগ তৈরি করতে সর্বোচ্চ খরচ ৫ হাজার টাকা। এবং এখানে কোন টাইম লিমিট নেই তার যতদিন খুশি সে এখানে এ্যাড দিয়ে রাখতেই পারে কোন খরচ হবে না।

আশাকরি আপনারা আস্তে আস্তে বুঝতেই পারছেন যে ব্লগিং এর চাহিদা বা পরিধি কতটা।

৫. এফিলিয়েট মার্কেটিং

এখন আমরা যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব সেটা হল এফিলিয়েট মার্কেটিং। মার্কেটিং কথাটা শুনলেই কেন যেন মনে হয় দোকানে-দোকানে ঘুরে পন্য বিক্রি করা। কিন্তু না আমরা এখন কথা বলছি অনলাইনে পন্য বিক্রির কথা।

আপনারা কমিশন এর কথাটাতো শুনেই থাকবেন যে কোন একটা পন্য বিক্রি করলে বিক্রেতারা কিছু কমিশন পান। এটাও ঠিক তেমন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং হল অনলাইনে অন্যের পন্য মার্কেটিং করে আয় করা। বিশ্বের বড় বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এই সুবিধাটা দিয়ে থাকেন যেমন- আমাজন, আলিএক্সপ্রেস, ইবেই ইত্যাদি।

উপরে উল্লিখিত সাইটগুলোতে আপনি একাউন্ট ওপেন করে যেকোন প্রডাক্ট এর উপর আপনি নিজস্বভাবে মার্কেটিং করে পন্য সেল করতে পারলে আপনি প্রতিটা প্রডাক্ট সেল এর উপর কমিশন পাবেন। এবং এই বিজ্ঞাপন আপনি আপনার ব্লগ সাইটেও প্রদর্শন করতে পারেন।

আপনার সাইটের এ্যাড দেকে যদি কেউ সেটার উপর ক্লিক করে পন্যটি ক্রয় করে বা ২৪ ঘন্টার মধ্যে অন্য কোন প্রডাক্ট ক্রয় করে তবে আপনি তার ক্রয়ের উপর কমিশন পাবেন। এবং এই কমিশনটি আপনার একাউন্টে জমা হবে।

এই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর আয় দিন-দিন অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। এজন্য এসকল মার্কেটিং এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ব্লগ থেকে অনেক বেশি আয় করা যায়।

অনেকেই একটা প্রশ্ন করে থাকে যে এত বড় বড় সাইট যে প্রডাক্টগুলো বিক্রির জন্য প্রদর্শন করছে সেই পন্য আমার ব্লগে দিলে কি বিক্রি হবে। আমি একটা কথা বলেই এর উত্তর দিচ্ছি। মহান আল্লাহতায়ালা সবাইকে সমান বুদ্ধিমত্তা দিয়ে দুনিয়াতে পাঠাননি।

এই জন্যই আপনি যদি আপনার ব্লগে একটা পন্যকে অন্যভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন তাহলে আপনার পন্য কিন্তু বিক্রি হতে বাধ্য। মার্কেটিং আসলে একটা আর্ট।

ব্লগিং শুরু করার ১০টি সহজ ধাপ

আমরা এত সময় ধরে জানলাম যে, ব্লগিং কেন করবেন কি উদ্দ্যেশ্য, কিভাবে আয় করবেন ইত্যাদি। কিন্তু আমরা এখন যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব সেটা হল কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন। আমাদের এই পর্বের টাইটেল ছিল যে ব্লগিং করে ২৫-৩০ হাজার টাকা ইনকাম করা।

তবে আমি আশা করি আপনারা যদি আমাদের নিচের এই গাইডলাইনগুলো সঠিকভাবে অনুসরন করেন তবে আপনার এই মাইল-ফলক স্পর্শ করতে সর্বোচ্ছ ৫-৬ মাস সময় লাগবে।

ব্লগিং শুরু করার পূর্বে নিচের বিষয়গুলো খুব গুরুত্বের সাথে একবার পরে দেখুনঃ

১. ব্লগের জন্য সঠিক বিষয় নির্বাচন করুন

২. সুন্দর একটা ডোমেইন নাম বাছাই করুন

৩. টপ লেভেল ওয়েব হোস্টিং নির্ধারণ করুন

৪. ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট বেঁছে নিন

৫. ব্লগ লেখার সরাঞ্জাম কম্পিউটার বা মোবাইল

৬. আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে ইউনিক চিন্তা করুন

৭. আর্টিকেল গুলির সঠিক কিওয়াড রিসার্স করুন

৮. সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং

৯. আর্টিকেল লেখার ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন

১০. ‍মনিটাইজেশন এর উপযোগী করে গড়ে তোলা

১. ব্লগের জন্য সঠিক বিষয় নির্বাচন করুন

প্রথমেই আমরা যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব সেটা হল – ব্লগের জন্য সঠিক বিষয় নির্বাচন।

কারন কোন কিছু শুরু করার আগে আপনার প্লান ও বিষয় নির্ধারন করা জরুরি। এখন বিষয় নির্ধারন করার পূর্বে আপনার কিছু বিষয় আগে থেকেই জানতে হবে যে কোন বিষয়গুলো ব্লগিং এর জন্য খুব জনপ্রিয়। এবং আপনার ব্লগিং এর লেখার ভাষাটা কি হবে – ইংলিশ, বাংলা নাকি অন্য কোন ভাষার ইত্যাদি।

এই সকল প্রশ্ন এবং উত্তর আপনার পূর্ব থেকেই নির্ধারন করে নিতে হবে।

কারন বর্তমান বিশ্বে ইংলিশ এর চাহিদা অনেক বেশি এবং এর কিওয়ার্ড এর রেটিং ও সার্চ মূল্য অনেক বেশি। তাই ইংরেজি লেখা কোন ব্লগ এর ভিজিটর এর বিপরীতে আয় তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয়।

তবে এটাও সত্যি যে আপনি যদি আপনার ভাষায় কোন ব্লগ তৈরি করেন তাহলে অনেক বেশি স্বাচ্ছ্যন্দ পাবেন। যাইহোক চয়েজটা আপনার।

এখন নিচে কিছু জনপ্রিয় ব্লগ এর বিষয় উল্ল্যেখ করা হল আপনাদের বিষয় নির্ধারন করাটা সহজ করে তুলতেঃ

১. টেকনোলজি

৩. স্বাস্থ্য ও ফিটনেস টিপস

৪. অনলাইন এসসিও ও ডিজিটাল মার্কেটিং

২. শিক্ষা বিষায়ক বা অনলাইন ট্রেনিং

৫. বিভিন্ন পন্যের রিভিউ

৬. আইটি টিপস এন্ড ট্রিকস

৭. কুকিং এন্ড রেসিপি

৮. ট্রাভেল এন্ড গাইডলাইন

৯. খেলাধুলার নিউজ

১০. সফটওয়্যার টিপস ইত্যাদি

উপরের বিষয় থেকে যেকোন একটি হতে পারে আপনার ব্লগ এর বিষয়। তবে আমার মতামত আপনি যে বিষয় এ বেশি পারদর্শী সেই বিষয় নিয়ে ব্লগ ওপেন করলে আপনি সফলতা খুব সহজেই ধরতে পারবেন।

বর্তমানে টেকনলজি এবং স্বাস্থ্য বিয়টা অনেক বেশি জনপ্রিয়।

অনলাইন মার্কেটটা আসলে সবার জন্য উন্মূক্ত। যেকেউ চাইলেই এখানে তার বিজনেস শুরু করতে পারে। তাইতো আমাদের ব্লগের লেখা প্রতিনিয়ত অনুসরন করুন। আর চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা সম্পূর্ন ফ্রিতে ডিজিটাল টিপস দিয়ে থাকি যে কিভাবে একটা অনলাইন বিজনেস এ সফলতা পাবেন।

২. সুন্দর একটা ডোমেইন নাম বাছাই করুন

সুন্দর একটা নাম আপনার ব্লগের ব্রান্ড মার্কেটিং এর কাজ করে থাকে। এজন্য আপনার ব্লগের জন্য একটা সুন্দর নাম বাছাই করতে হবে।

ডোমেইন এর নাম বাছাই করার ক্ষেত্রে আমার মতামত অন্তত কিছুটা সময় নিন। দরকার হলে ১-২ দিন সময় নিতে পারেন। কারন এই নামটা নিয়ে আপনার আজীবন চলতে হবে। একটা সুন্দর ডোমেই নাম বাছাই করার জন্য কিছু পরামর্শ-

১. ডোমেইন নামটা অবশ্যই ৮-১২ অক্ষরের মধ্যে রাখার চেস্টা করুন

২. ডোমেইন নামের মধ্যে কোন সংখ্যা বা হাইফেন ব্যবহার না করাটা ভাল

৩. Leandomainsearch.com এই ডোমেইন এর মাধ্যমে আপনার নামটি সহজে বাছাই করে নিতে পারেন

৪. টপ লেভেল ডোমেইন .com বাছাই করুন

৫. ডোমেইন এর মধ্যে আপনার বিষয় সম্পর্কিত কোন শব্দ থাকলে ভাল হয়। যেমন – টেকনিক্যাল ব্লগ এর জন্য আপনার ডোমেইন নাম এ যদি tech সম্পর্কিত কোন শব্দ থাকে তাহলে ভাল হয়।

উপরের এই বিষয়গুলো বিশ্লেষন করে আপনি আপনার ডোমেইন এর জন্য সুন্দর একটি নাম ঠিক করতে পারবেন।

৩. টপ লেভেল ওয়েব হোস্টিং নির্ধারণ করুন

আপনার ওয়েবসাইটের জন্য টপ লেভেল ওয়েব হোস্টিং নির্ধারন করুন। এই বিষয়টা নির্বাচন করার ক্ষেত্রে প্রায় অনেকেই ভুল করে থাকে। কারন হোস্টিং সারভারে আপনার ওয়েবসাইটের সকল তথ্য থাকে এবং সাইটটিকে ২৪/৭ আপ রাখার জন্য এটা অনেক বেশি জরুরি।

এই জন্য আপনি যদি আপনার হোস্টিংটা নিম্নমানের বাছাই করেন। তবে দেখা যাবে যে প্রতিদিনের কয়েকঘন্টা আপনার সাইটটি ডাউন থাকছে।

এই রকম কোন সাইট যদি দিনের অনেকটা সময় ডাউন থাকে এবং সেই সময়ে আপনার কোন ভিজিটর যদি এসে ফিরে যায়। তাহলে সেই ভিজিটর আর আপনার সাইটে আসার ইচ্ছা পোষন করবে না। এছাড়াও এই জন্য গুগল এর পেজ র‍্যাঙ্কিং দিনে দিনে অনেক কমে আসবে।

এজন্য আমার মতামত আপনি হোস্টিংটা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমেরিকা বা সিঙ্গাপুর এর সার্ভার চয়েজ করতে পারেন। এটা আপনি সরাসরি GoDaddy, HostGator ইত্যাদি থেকে নিতে পারেন। এছাড়াও আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি এমন টপ লেভেল হোস্টিং প্যাকেজ ক্রয় করতে ক্লিক করুন

৪. ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট বেঁছে নিন

আপনার ব্লগের জন্য ডোমেইন ও হোস্টিং হল এখন দরকার ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট করা। এখানে এসে অনেকেই বড় ভুল করে বসে।

অনেকেই প্রথম দিকে অনেক টাকা খরচ করে একটা সাইট ডেভেলপমেন্ট করে থাকে। আবার অনেকেই সাইট ডেভেলপমেন্ট করার খরচের জন্য ব্লগিং শুরু করতে ভয় পায়। আমিও তেমনটাই ভাবতাম যে একটা সাইট তৈরি করতে অনেক টাকা দরকার। কিন্তু এখন ওয়ার্ডপ্রেস এর জগতে এসে জানলাম একটা সাধারন ব্লগ সাইট করতে মাত্র ২-৩ ঘন্টা সময় লাগে আর খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম।

আপনারা কি জানেন বিশ্বের ৬৫% ওয়েবসাইট এই ওয়ার্ডপ্রেসে ডেভেলপ করা। কারন ওয়ার্ডপ্রেস সম্পূর্ন ফ্রি এবং কোন খরচ ছাড়াই আপনি তৈরি করে নিতে পারেন ই-কমার্স এর মত বড় বড় সাইট। এছাড়াও আছে হাজারো থিম ও প্লাগিন এর সমাহার যা আপনি ফ্রি ও প্রিমিয়াম ‍দুভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন।

খুব কম খরচে ওয়ার্ডপ্রেস সাইট তৈরি করে নিতে ভিজিট করে আসুন এই সাইটে।

ওয়ার্ডপ্রেস সাইট করার আরেকটে বড় সুবিধা আপনি যেকোন সময় আপনার সাইট এর সম্পূর্ন ডিজাইন পরিবর্তন করে নিতে পারেন কোন খরচ ছাড়াই।

অবশেষে আমার মতামত যারা নতুন ব্লগিং শুরু করতে যাচ্ছেন তারা চাইলে এই ওয়ার্ডপ্রেস থেকেই যাত্রা শুরু করতে পারেন। কারন এখানে আপনি আপনার সাইটের এসসিও বা মার্কেটিং এর জন্য অনেক ফ্রি টুলস পাবেন। যা ব্যবহার করে আপনিও নিজে থেকে আপনার সাইটের এসসিও করতে পারবেন।

৫. ব্লগ লেখার সরাঞ্জাম কম্পিউটার বা মোবাইল

আপনি যখন একটা ব্লগ তৈরির কথা চিন্তা করছেন। তাহলে অবশ্যই আপনার লেখা-লিখির ইচ্ছা আছে। এখন এই লেখা-লিখি করার জন্য আপনার একটা ডিভাইস দরকার পরবে, সেটা হতে পারে কম্পিউটার বা মোবাইল।

তবে অনেকেই একটা প্রশ্ন করে যে, আমরা কি ব্লগিং মোবাইল থেকে শুরু করতে পারব? আমার উত্তর হবে – হ্যা আপনি পারবেন।

কিন্তু এটাও আপনার বুঝতে হবে যে, মোবাইলের কিন্তু অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন আপনি আপনার সাইট এর কোন ডিজাইন করতে চাইলে মোবাইল থেকে এটা অনেক কষ্টকর কিন্তু যদি কম্পিউটার থাকে তাহলে অনেক সহজেই কাজটি করে নিতে পারবেন।

এছাড়াও মোবাইল স্ক্রীন ছোট হওয়ার কারনে অনেক কিছুই সঠিকভাবে দেখা যায় না। এছাড়াও আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হবেন।

তাইতো আপনি যদি আপনার ব্লগটাকে দ্রুত জনপ্রিয় করতে চান তাহলে একটা কম্পিউটারের অনেক দরকার। কারন আপনাকে প্রতিনিয়ত সাইটের কিওয়ার্ড রিসার্স বা এ্যানালাইসিস করার জন্য বিভিন্ন সাইটে ভিজিট করতে হবে আবার সাইটের কাজও করতে হবে। এটা মোবাইল দিয়ে সম্ভব না।

৬. আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে ইউনিক চিন্তা করুন

আপনি যখন অনেক সময় ব্যয় করে একটা আর্টিকেল লিখবেন তখন আপনার চিন্তা থাকবে আর্টিকেলটি যেন সকলে পরে। এজন্য আপনার লেখাটা অবশ্যই অন্যদের থেকে ভিন্ন বা ইউনিক হতে হবে।

একটা ইউনিক আর্টিকেল নতুন অর্গানিক কিওয়ার্ড তৈরির জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ন। বর্তমানে গুগল তাদের মনিটাইজেশন সার্ভিসটা নতুন কোন সাইটকে দেওয়ার পূর্বে সম্পূর্ন সাইটটিকে ভাল করে চেক করে। এবং আপনার সাইটে যদি কোন ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট পেয়ে থাকে তাহলে সাইটের মনিটাইজেশন পেতে ঝামেলা হতে পারে।

এজন্য অবশ্যই সবসময় চিন্তা করবেন যে একটা ব্লগ শুরু করার পরে অন্তত ১৫-২০টি ইউনিক কন্টেন্ট দেওয়ার এবং প্রতিটা কন্টেন্ট এর ওয়ার্ড সংখ্যা যেন ১৫০০+ হয়ে থাকে।

বর্তমানে সারা বিশ্বব্যাপি হাজার হাজার নতুন ব্লগ অনলাইনে আসছে এবং সকলেই তাদের নিজস্ব চিন্তাধারা ব্যবহার করে কন্টেন্ট লিখছে তাহলে আপনার লিখাটাই কেন সকলে পরবে। এজন্যই আপনাকে সবসময় কিছু ইউনিক টেকনিক খাটাতে হবে প্রতিটা আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে।

৭. আর্টিকেল গুলির সঠিক কিওয়াড রিসার্স করুন

আপনার আর্টিকেল লেখা হয়ে গেলে এখন এই লেখাটার উপর কিওয়ার্ড রিসার্স করতে হবে। কারন আপনার লেখাটার কিওয়ার্ড রিসার্স যত ভাল হবে আপনার পোস্টটা তত বেশি মানুষের কাছে গিয়ে পৌছাবে।

আর যদি কিওয়ার্ড রিসার্স ভাল না হয় তাহলে গুগল সার্চে আপনি অনেক পিছে পরে থাকবেন। এজন্য কিওয়ার্ড রিসোর্স করার জন্য অন্তত প্রতিটা পোস্টের জন্য ২ ঘন্টা সময় দিন। যার ফলে অর্গানিক ভিজিটর পেতে সহজ হবে।

আপনি কি জানেন কিওয়ার্ড কি? এবং কিভাবে রিসার্স করে?

উপরের চিত্রটা দেখুন। আমরা সাধারনত গুগল এ যখন কোন একটা কিছু লিখে সার্চ করি। তখন গুগল তার নিজস্ব কিওয়ার্ড লিস্ট থেকে যে কিওয়ার্ড আপনার লেখার সাথে মিলে যায় সেগুলো প্রদর্শন করে। এই প্রদর্শন করা শব্দগুলোই কিওয়ার্ড।

এজন্য এই কিওয়ার্ড আপনি যত বেশি আপনার লিখার মধ্যে ব্যবহার করবেন এবং সাথে টাইটেলে ও থাকবে। গুগল এটা এ্যানালাইসিস করে এই পোস্টগুলোকে অটোমেটিক রেঙ্ক করিয়ে দিবে।

এজন্য আপনার সাইটের কিওয়ার্ড এ্যানালাইসিস করতে বিভিন্ন সাইট এবং ইউটিউব ভিডিও অনুসরন করতে পারেন। নিচে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ন লিংক শেয়ার করছিঃ

1. Neil Patel Blog

2. MOZ Keyword Research

3. Keyword Research Tool

উপরে ২ টা ওয়েবসাইট লিংক এবং ১টি কিওয়ার্ড রিসোর্স টুলস দেওয়া হল। আমি প্রায় ৩ বছর ধরে নিল পাটেল এর লেখা অনুসরন করি। তাকে আসলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কিং বলা যায়।

কারন তার প্রতিটা লেখা একজন ব্যক্তিকে নতুন কিছু জানতে আগ্রহী করে তোলে। আপনাদের সময় থাকলে আপনারাও একবার তার লিখা পরে দেখতে পারেন।

৮. সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং

আপনি যদি একজন নতুন ব্লগার হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার পরিচিতি বৃদ্ধি করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং একটা বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

আমি প্রায় অনেক ব্লগার এর কাছে শুনেছি যে তারা তাদের ব্লগের জন্য মার্কেটিং শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়াতেই করে থাকে। তাদের প্রত্যেকের সাইটের ভিজিটর সংখ্যা প্রতিদিন প্রায় হাজার এর উপর।

তবে একটা বিষয় অবশ্যই সবসময় মনে রাখবেন যে আপনার ভিজিটর যেন অর্গানিক কিওয়ার্ড থেকে যেন বেশি আশে। তাহলে আপনার সাইট রেটিং অনেক বেড়ে যাবে গুগল এর কাছে।

একটা পরিসংখ্যান বলি আপনাদের, মনে করুন- আপনার সাইটের অর্গানিক ভিজিটর প্রতিদিন ১০০ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ভিজিটর ১০০০ হাজার। আপনি কি জানেন আপনার সাইটের জন্য কোনটা সবথেকে বেশি ভাল।

অবশ্যই সবসময় অর্গানিক ভিজিটর ভাল একটা সাইটকে গুগল এ রেঙ্ক করার জন্য। তাইতো সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং করার সাথে সাথে আপনার সাইটের এসসিও চালিয়ে যেতে হবে।

৯. আর্টিকেল লেখার ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন

কোন কিছুই অনিয়মিত ভাল নয়। তাইতো ব্লগিং এর ক্ষেত্রেও এই কথাটা সত্য। আপনি আপনার সাইটে একটা নিয়ম মেনে পোস্ট করতে পারেন। এতে করে আপনার ভিজিটরদের কাছে একটা বিষয় ক্লিয়ার হবে যে আপনার সাইটে কখন নতুন পোস্ট করা হয়।

প্রতিনিয়ত পোস্ট করলে সাইটের রেঙ্কিং ভাল থাকে। কারন আপনি যদি প্রতিনিয়ত নতুন পোস্ট করেন তাহলে যারা আপনার সাইটের সাবস্ক্রাইবার তারা অন্তত সাইটের নোটিফিকেশন পেলে লিংকটা ক্লিক করে আর্টিকেলটা কিছুটা হলেও পরে দেখে।

এছাড়াও নতুন পোস্ট না করলে যারা আপনার সাইটের ফলোয়ার তারাতো আর আসবে না কারন আপনার সাইটের সব লেখায় তাদের আগে থেকে পড়া হয়ে গেছে।

এজন্য যারা নতুন ব্লগিং শুরু করবেন তারা অন্তত এই বিষয়টা সঠিকভাবে পালন করার চেষ্টা করবেন। যে নিয়ম মেনে অন্তত পক্ষে প্রতিদিন না হোক সপ্তাহে হলেও একটা পোস্ট ছাড়তে হবে।

১০. ‍মনিটাইজেশন এর উপযোগী করে গড়ে তোলা

আমরা একে একে সর্বশেষ পয়েন্টে চলে আসলাম। এখন আপনাদের আলোচনার বিষয় কিভাবে আপনি আপনার সাইটটিকে মনিটাইজেশন এর উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারেন।

আপনার যদি সাইটটি মনিটাইজেশন করা টার্গেট হয় তাহলে আমাদের আরো কিছু গাইডলাইন অনুসরন করতে পারেন।

আপনার সাইটটি যদি ওয়ার্ডপ্রেস এর হয়ে থাকে তাহলে আপনি Rank Math প্লাগিন টা এ্যাড করে নিতে পারেন। তাহলে আপনি আপনার প্রতিটা পোস্ট তৈরি করতে পারবেন মনিটাইজেশন এর উপযোগী করে। এছাড়াও আরো অনেক প্লাগিন আছে যেগুলো আপনার এসসিও বা কিওয়ার্ড রিসার্স করার জন্য অনেক বেশি উপযোগী।

এছাড়াও আপনি অন্তত পক্ষে ২৫-৩০টা পোস্ট করবেন সম্পূর্ন আলাদা লেখার উপরে। সবসময় নিজের ভাষায় লেখার চেষ্টা করবেন এবং কপি-পেস্ট করা যাবে না।

এছাড়াও আপনার প্রতিটা পোস্ট গুগল, বিং এবং ইয়ানডেক্সে ইনডেক্স করতে হবে। ইনডেক্স করলে আপনার সাইটে আস্তে আস্তে অর্গানিক ভিজিটর বৃদ্ধি পাবে।

আপনার সাইটটি মনিটাইজেশন এর উপযোগী করতে গুগল কনসোল ও বিং ওয়েবমাস্টার অনেক প্রয়োজনীয়। আপনার এটা সেটাপ করে দেখতে পারেন। আমরা শীঘ্রই এর উপরে কিছু আর্টিকেল দিব আমাদের সাথেই থাকুন।

এই সকল কাজগুলো সঠিকভাবে করলে আশাকরি আপনি সাইটের মনিটাইজেশন খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।

আমাদের কিছু কথাঃ

পরিশেষে এমন কিছু কথা আপনাদের বলে যেতে চাই যেগুলো শুনে আপনাদের কিছুটা হলেও মনের প্রশান্তি মিলবে।

আপনি যদি আমাদের এই লেখাটা পরে মনস্থির করেন যে আপনি একজন ব্লগার হবেন তাহলে আমার মনে হয় আপনি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।

আপনি কি জানেন বাংলায় ব্লগিং করে মাসে কত টাকা আয় করা যায়?

আসলে এই প্রশ্নের উত্তর কেউ সঠিকভাবে দিতে পারবে না। কারন এ সকল আয়ের কোন লিমিটেশন হয় না তবে আনুমানিক প্রায় ১০০ হতে ২০০ ডলার যা আপনার মনিটাইজেশন পাওয়ার ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে। তবে যদি আপনার সাইটের ভিজিটর সংখ্যা বেশি হয় তাহরে আরো বাড়তে পারে।

একটা ব্লগের আয় সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভরকরে সেই ব্লগের ট্রাফিকের উপর। আপনার ব্লগে ভিজিটর বা ট্রাফিক যত বেশি হবে আপনার ব্লগ থেকে আয় তত বেশি হবে। ব্লগের আয় নির্ভর করে আরও একটি বিষয়ের উপর আর সেটা হল ইমেইল লিষ্টের উপর।

আপনার ইমেইল লিষ্ট বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ব্লগের আয় বৃদ্ধি পায়। কারন, আপনার ইমেইল লিষ্ট থাকলে সেই লিষ্টের ব্যক্তি গুলোর কাছে আপনার ব্লগের নিউ পোষ্টের প্রচারনা চালাতে পারবেন।

আপনাদের আরেকটি ধারনা দেয় ইংরেজি ব্লগিং বিষয়ে। একটি ইংরেজি প্রথম শ্রেনীর ব্লগ থেকে প্রতি মাসে প্রায় ২ হাজার হতে ৩ হাজার ডলার পর্যন্ত আয় হয়। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। এবং এই আয় দিনে দিনে অনেক বৃদ্ধি পায়। এমনও ব্লগ আছে যারা মাসে 5 লক্ষ ডলার এর বেশি আয় করে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি। Ex.- HoWToGeek, PCMag

অনেকেই এমন কথা শুনে বিশ্বাস করে না। মনে করে এত টাকা আবার অনলাইনে আয় করা যায় নাকি। এটাই সত্যি। এখন টেকনলোজির যুগ সবই অনলাইনে সম্ভব। তাইতো আর দেরি না করে আপনিও শুরু করুন আজ থেকে।

আমি আশা করি আপনি যদি আমাদের উপরের গাইডলাইন সমূহ মনোযোগ সহকারে অনুসরন করেন। তাহলে দেখা যাবে আপনিও ৬ মাস পরে হয়ে উঠবেন একজন ব্লগার। আর যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাদের জানাতে ভুলবেন না।

সবার জন্য সুভকামনা-ভাল থাকুন! সুস্থ থাকুন। – আল্লাহ্ হাফেজ!

Related Posts

TechPoth

টেকপথ একটি জনপ্রিয় প্রযুক্তিগত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। যার মাধ্যমে আপনি শিখতে পারবেন ফ্রিল্যান্সিং, ইউটিউবিং, সফটওয়্যার সিকিউরিটি, গ্যাজেট তথ্য, টেক ট্রাবলশুটিং ইত্যাদি ।

This Post Has 3 Comments

Leave a Reply