Plagiarism Checker কি? কিভাবে Plagiarism Checker কাজ করে?

Abdur Rahman
8 Min Read
Image by Freepik

Plagiarism মানে কি: Plagiarism শব্দের আবিধানিক অর্থ হচ্ছে চুরি এবং Plagiarism Checker (প্লাগিরিজম চেকার) মানে চুরিকৃত বিষয়টি পরিক্ষা করার একটি মাধ্যম বা প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে যেকেউ অনলাইনে বসে কোন একটি আর্টিকেল বা প্রবন্ধের সত্যতা যাচাই করতে পারবেন। অথবা কারও কোন নতুন লিখিত আর্টিকেল বা প্রবন্ধ ইন্টারনেটে কারো লেখার সাথে ম্যাচিং করছে কিনা সেটাও আপনি এর মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করতে পারবেন।

বর্তমান এই তথ্য ওভারলোডের যুগে, মৌলিকতা একটি মূল্যবান এবং অতিব জরুরী বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে। কারন, ক্রেডিট না দিয়ে অন্যের কাজ কপি করে নিজের বলে চালানোর অভ্যাস দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে চুরির শনাক্তকরণ বা Plagiarism Checker এর মাধ্যমে এর প্রতিরোধ পদ্ধতিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাই, আর দেরি না করে Plagiarism চেকারের জগতে প্রবেশ করুন এবং খুজে বেড় করুন আপনার কন্টেন্ট বা লিখা কোথায় কোথায় আপনার অনুমতি ছাড়া ব্যবহার হচ্ছে। আমরা আজকের এই বিস্তৃত নির্দেশিকায়, Plagiarism Checker এর কার্যকারিতা এবং ব্যবহার সম্পর্কে জানবো। এবং বিভিন্ন ধরনের Plagiarism শনাক্তকরণ টুলস নিয়ে আলোচনা করবো।

- Advertisement -

Plagiarism Checker একটি ফ্রি টুলস আপনারা যেকেউ চাইলেই এটা গুগলে সার্চ করে পেয়ে যেতে পারেন। বর্তমানে অনলাইনে অনেক ধরনের Plagiarism Checker ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার সাইটের তথ্য যাচাই করতে পারবেন। সাধারনত এই টুলসটি যারা লিখালিখি করে বা ডাটা এন্ট্রি জব এর সাথে জড়িত তাদের জন্য খুবই জনপ্রিয়।

পড়ুনঃ

Plagiarism Checker এর ধারনা

Plagiarism একটি নতুন ধারণা নয়। এটি কয়েক শতাব্দী ধরে চলে আসছে, কিন্তু ইন্টারনেটের আবির্ভাবের সাথে সাথে এটি আরও উন্নত ও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। Plagiarism বা চৌর্যবৃত্তি অনেক ধরনের হতে পারে, যেমন- কোনো উৎস থেকে সম্পূর্ণ প্যাসেজটি কপি করে পেস্ট করা অথবা অন্যের কন্টেন্ট কৃতিত্ব না দিয়ে তার ব্যাখ্যা করা।

Plagiarism বর্তমানে শুধুমাত্র লেখালিখির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই বরং এটা সকল ক্ষেত্রের সাথে মিশে গেছে। এখন অনেকে তাদের কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য অনেক সাইট থেকে ছবিও চুরি করে এবং নিজের সাইটে ব্যবহার করে। কিন্তু আপনি কি জানেন এটি কত বড় ক্রাইম?

অনলাইন আইনে আপনার হয়তবা জেল-জরিমানা হবে না তবে আপনি অনলাইনের কাজের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। আপনার সাইটটি বা সার্ভিসটি সারা-জীবনের জন্য গুগল থেকে বহিস্কৃত হতে পারে, যা আপনার জন্য অনেক বড় ঝুকি। যাইহোক, বর্তমানে গুগলসহ অন্যান্য অনেক কোম্পানী নতুন নতুন প্রযুক্তি ডিজাইন করছে এই নকল বা চুরি প্রতিরোধ করার জন্য। এজন্য এখনকার এই আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সির যুগে আপনি এই কাজ করে বেশি-দিন টিকে থাকতে পারবেন না।

- Advertisement -

কীভাবে Plagiarism Checker কাজ করে

Plagiarism চেকাররা পাঠ্য বিশ্লেষণ করতে এবং বিদ্যমান অনলাইনের উত্সগুলির সাথে যে কোনও মিল সনাক্ত করতে নির্দিষ্ঠ কিছু অ্যালগরিদম সেট করে। এই অ্যালগরিদমগুলি আপনার জমা দেওয়া পাঠ্যকে অনলাইনে বই, নিবন্ধ, ওয়েবসাইট এবং একাডেমিক কাগজপত্র সহ অনলাইনে প্রকাশিত কাজের একটি বিশাল ডাটাবেসের সাথে তুলনা করে। প্রক্রিয়াটির মধ্যে পাঠ্যকে ছোট ছোট ইউনিটে বিভক্ত করা হয়, যেমন বাক্য বা বাক্যাংশ, এবং ডাটাবেসের সাথে তুলনা করা।

Plagiarism পরীক্ষকদের দ্বারা ব্যবহৃত সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতিগুলির মধ্যে একটি হল স্ট্রিং-ম্যাচিং অ্যালগরিদম। এই অ্যালগরিদমটি সঠিক মিল খোঁজার মাধ্যমে জমা দেওয়া পাঠ্যকে ডাটাবেসের সাথে তুলনা করে। যদি একটি বাক্য বা বাক্যাংশ ডাটাবেসের একটি উত্সের সাথে মিল পাওয়া যায়, তবে এটি সম্ভাব্য চুরির ঘটনা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

Plagiarism পরীক্ষকদের দ্বারা ব্যবহৃত আরেকটি কৌশল হল ফিঙ্গারপ্রিন্টিং অ্যালগরিদম। এই অ্যালগরিদম প্রতিটি পাঠ্যের বৈশিষ্ট্যগুলির উপর ভিত্তি করে একটি অনন্য আঙ্গুলের ছাপ তৈরি করে- যেমন শব্দ চয়ন, বাক্য গঠন এবং বিরাম চিহ্ন। এরপর, জমা দেওয়া পাঠ্যের আঙুলের ছাপগুলি ডেটাবেসের উত্সগুলির আঙ্গুলের ছাপের সাথে তুলনা করা হয় এবং কোনভাবে যদি এর মধ্যে উচ্চ মাত্রার সাদৃশ্য সনাক্ত করা হয় তাহলে বুঝতে হবে এটা একটি ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট এবং বর্তমানে এটি অনলাইনে বিদ্যমান।

প্ল্যাগিয়ারিজম চেকারগুলি কার্যকরভাবে ব্যবহার করার জন্য টিপস

  • কাজ করার পূর্বে টুলসটি বুঝুন: আপনি যে Plagiarism চেকার ব্যবহার করছেন তার কার্যকারিতা এবং বৈশিষ্ট্যগুলির সাথে নিজেকে পরিচিত করুন। প্রতিটি টুলের নিজস্ব অনন্য সেটিংস এবং বিকল্প থাকতে পারে যা ফলাফলের নির্ভুলতা বাড়াতে পারে।
  • একাধিক Plagiarism টুল ব্যবহার করুন: ব্যাপক Plagiarism সনাক্তকরণ নিশ্চিত করতে, একাধিক Plagiarism চেকার ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করুন। বিভিন্ন টুলের বিভিন্ন ডাটাবেস এবং অ্যালগরিদম থাকতে পারে, যার ফলে বিভিন্ন ফলাফল হতে পারে। একাধিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে পৃথক চেকারের সীমাবদ্ধতা প্রশমিত করতে সাহায্য করতে পারে।

এই টিপসগুলি অনুসরণ করে, আপনি Plagiarism চেকারের কার্যকারিতা সর্বাধিক করতে পারেন এবং আপনার কাজের মৌলিকতা নিশ্চিত করতে পারেন। এখন, বাজারে উপলব্ধ কিছু জনপ্রিয় Plagiarism পরীক্ষক টুলস যাচাই করা যাক৷

জনপ্রিয় কিছু Plagiarism Checker টুলস্

1. Small SEO Tools: বর্তমান সময়ের সবথেকে জনপ্রিয় অনলাইন Plagiarism টুল হল Small SEO Tools। যারা কিনা সম্পূর্ন বিনামূল্যে সেবা প্রদান করে থাকে। আপনি এই টুলসটি ব্যবহার করে খুব সহজেই অনলাইনের Plagiarism বা ডাটা ডুপ্লিকেসি চেক করা যায়। এই সাইটটিতে ১০০+ টুলসের সেবা পাওয়া যায় একদম ফ্রিতে, তবে প্রিমিয়াম প্যাকেজও বিদ্যমান।

2. Plagiarism Detector: Plagiarism Detector আরেকটি জনপ্রিয় প্লাগিয়ারিজম চেকার। যদিও প্রাথমিকভাবে এর মাধ্যমে চেক করে সঠিক তথ্য পাওয়া যেত না তবে এখনে এর অ্যালগরিদম এবং ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনি সহজেই এই টুলের মাধ্যমে ১০০০ ওয়ার্ড পর্যন্ত প্লাগিয়ারিজম চেক করতে পারবেন। এছাড়াও আরো এসইও রিলেটেড অনেক প্লাগিন টুলস এখানে আছে।

- Advertisement -

3. CopyScape: CopyScape নামটির মধ্যেই কেমন একটি কপি-করার ঘন্ধ পাওয়া যায়। এই টুলটির মাধ্যমে আপনি সাইটের Plagiarism ডিটেক্ট করতে পারবেন। তবে এই সাইটের প্লাগিয়ারিজম খোজার প্রসেসটি উপরের প্রসেসগুলোর থেকে সম্পূর্ন আলাদা। কারন এখানে আপনাকে কোন কন্টেন্ট কপি করে পেষ্ট করা দরকার পরবে না আপনি শুধুমাত্র লাইভ ওয়েবসাইট এর ঠিকানা কপি করে পেষ্ট করবেন। তখন বাকি কাজ CopyScape করে আপনার সামনে রিজাল্ট প্রকাশ করবে।

4. Quill SEO Tools: Quill SEO Tools নতুন Plagiarism চেকার টুলস্ । যেটা ‍দিনে-দিনে ভালই জনপ্রিয়তা পেয়ে যাচ্ছে। এই সাইটটিতে প্রতি মাসে প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ ভিজিট করে তাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য।

উপসংহার

ডিজিটাল যুগে আমরা মৌলিকতা এবং সততার সাথে যোগাযোগ করার পদ্ধতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছি। এই শক্তিশালী টুলগুলি একইভাবে ছাত্র, শিক্ষাবিদ এবং কন্টেন্ট নির্মাতাদের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। Plagiarism চেকাররা কীভাবে কাজ করে, তাদের সুবিধা এবং সীমাবদ্ধতা এবং কীভাবে তাদের কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে হয় তা বোঝার মাধ্যমে, আমরা আত্মবিশ্বাসের সাথে মৌলিকতার জগতে নেভিগেট করতে পারি।

- Advertisement -

যদিও Plagiarism চেকারগুলি চুরির বিরুদ্ধে একটি মূল্যবান প্রতিবন্ধক হিসাবে কাজ করে, তাদের মূল চিন্তার দক্ষতা বিকাশের বিকল্প হিসাবে দেখা উচিত নয়। একটি যুগে যেখানে তথ্য সহজেই উপলব্ধ, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, সৃজনশীলতা এবং নৈতিক আচরণ গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চৌর্যবৃত্তি চেকারদের এই প্রচেষ্টায় সহযোগী হিসাবে দেখা যেতে পারে, আমাদের সততা বজায় রাখতে, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি রক্ষা করতে এবং একটি ভবিষ্যত গঠন করতে সাহায্য করে যেখানে মূল চিন্তাবিদরা উন্নতি লাভ করে।

তাই চলুন, আমরা আজ থেকে শপথ গ্রহন করি যে আমরা অনলাইনের কোন তথ্য চুরি করে নিজের করে চালাবো না। এখনকার সময়ে আর্টিফিসিয়াল যুগে কেন তথ্য চুরি করতে হবে। আপনি শুধুমাত্র আপনার মনের ভাবটি চ্যাটবটকে সঠিকভাবে বোঝাতে পারলেই নিমিষে আপনার ১০০০/১২০০ ওয়ার্ড এর একটি আর্টিকেল লেখা হয়ে যাবে। ধন্যবাদ!

Share This Article
1 Comment